মোং রিদুয়ান চৌধুরী
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নে মোঃ ওয়াসিম নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের সোর্স পরিচয়ে সাধারণ মানুষের ওপর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। চিহ্নিত এই অপরাধীর বিরুদ্ধে মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র, চাঁদাবাজি, চোরা কাঠ পাচারসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠলেও এখনও সে প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে নির্বিঘ্নে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বীরদর্পে। এলাকাবাসী দাবি করছে, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির সরাসরি ও জরুরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই চক্রকে থামানো সম্ভব নয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, মোঃ ওয়াসিম (৪০), পিতা: মৃত আব্দুস চোবান, মোনাফ সওদাগর বাড়ি, পশ্চিম চরণদ্বীপ এক সময় নদীপথে চোরা কাঠ পাচার করলেও বর্তমানে সে চোলাই মদ ও ইয়াবার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কর্ণধার। প্রতিদিন শত শত লিটার দেশীয় তৈরি মদ সে কর্ণফুলী নদীপথে বোয়ালখালী, মোহরা, মদুনাঘাট, রাউজানসহ আশপাশের এলাকায় সরবরাহ করছে। অভিযোগ রয়েছে, মিয়ানমার সীমান্ত হয়ে ইয়াবা ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র এনে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সরবরাহ করে ওয়াসিম। এসব অস্ত্র দিয়ে সে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে এবং তার মাদক ব্যবসার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, সে নিজেকে পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখায় এবং মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকে চাঁদা আদায় করেন। এলাকাবাসীরা জানান, ওয়াসিম বলে বেড়ায় ‘আমার কথায় পুলিশ আসে, সেনাবাহিনী অভিযান চালায়’। এই ধরনের বক্তব্য প্রশাসনের ভাবমূর্তিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ওয়াসিমের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, সে বিভিন্ন নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উসকানিমূলক তথ্য দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করছে। তার ইন্ধনে ইতোমধ্যে কয়েকজন নিরাপরাধ ব্যক্তি পুলিশি হয়রানির শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এলাকার সচেতন নাগরিকরা জানান, ওয়াসিম একদিকে যুব সমাজকে মাদকাসক্ত করছে, অন্যদিকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে। প্রশাসনের প্রতি তাদের একটাই অনুরোধ এখনই যদি সরকারি হস্তক্ষেপ না আসে, তাহলে এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর ইতোমধ্যে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এলাকাবাসীর পক্ষে। যেখানে ওয়াসিমের বিস্তারিত অপরাধ ও প্রমাণসহ তুলে ধরা হয়েছে।অভিযোগকারীদের অনুরোধ তাদের পরিচয় ও নিরাপত্তা যেন গোপন রাখা হয়। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন অভিযোগকারী বলেন, “ওয়াসিম শুধু অপরাধীই নয়, সে একটি সামাজিক ব্যাধিও। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হলে গোটা চরণদ্বীপকেই তার নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে হবে।” এ বিষয়ে বোয়ালখালী থানার একাধিক সূত্র জানায়, বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবিলম্বে মোঃ ওয়াসিম ও তার চক্রের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা না নিলে চরণদ্বীপসহ আশপাশের জনপদে সামাজিক বিপর্যয় নেমে আসবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এলাকাবাসীর এখন একটাই দাবি ডিআইজির সরাসরি হস্তক্ষেপ।